SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (প্রাথমিক) - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - আকাইদ – বিশ্বাস | NCTB BOOK

আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের নামই হচ্ছে ইসলাম। এই আনুগত্যের জন্য প্রয়োজন আল্লাহ তায়ালার সত্তা ও গুণাবলি সম্পর্কে জানা ও ইমান আনা। আল্লাহর সত্তা সম্পর্কে পূর্বের পাঠে আমরা জেনেছি। এখন আমরা আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে জানব।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের রব। আমাদের পালনকর্তা। আল্লাহ সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনিই সবকিছু লালনপালন করেন। গাছপালা, পশুপাখি, জীবজন্তু, সবারই খাদ্যের প্রয়োজন হয়। লালন-পালনের দরকার পড়ে। সবার খাদ্য এক রকম নয়। আমরা ভাত, মাছ, গোশত, ফলমূল খাই। পশুপাখি খায় ঘাস ও পোকামাকড় ইত্যাদি। কিছু গাছপালা এসব কিছু খেতে পারে না। পাছপালার মুখ নেই। তারা মাটি থেকে শিকড় দিয়ে পানি শুষে নেয়। আর বাতাস থেকে নেয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড। এ দিয়ে তারা খাদ্য তৈরি করে।

আমরা সব সময় শ্বাস নিই এবং শ্বাস ফেলি। শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়া কোনো জীব বাঁচে না। জীবের শ্বাস ফেলার সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত বায়ু বের হয়। গাছ এই কার্বন-ডাই- অক্সাইড গ্রহণ করে খাদ্য তৈরির উপাদান হিসেবে। আর আমাদের জন্য হাড়ে অক্সিজেন। শ্বাস নেওয়ার সময় আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করি। অক্সিজেন ছাড়া কোনো জীব বাঁচতে পারে না। এ বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায় আল্লাহর মহিমা কত বড়। আমাদের জন্য বা বিব, পাছপালার জন্য তা খাদ্য তৈরির উপাদান। গাছপালার মাধ্যমে আমরা অক্সিজেন পাই, ফলমূল ও খাদ্য পাই। কত ভাবে আল্লাহ তায়ালা আমাদের লালন-পালন করেন।

আমরা জানি, পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোনো জীব বেঁচে থাকতে পারে না। পানি ছাড়া গাছপালাও বাঁচে না। প্রতিদিন আমাদের প্রচুর পানি ব্যবহার করতে হয়। এ পানি আমরা কোথা থেকে পাই?

প্রতিদিন সূর্যের তাপে নদীনালা, খালবিল ও সাগরের পানি জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ভেসে বেড়ায়। পরে ঠাণ্ডা হলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। এই পানির কিছু অংশ মাটির নিচে জমা হয় আর কিছু অংশ পুকুর, নদীনালা, খালবিল ও সাগরে গিয়ে পড়ে।

মাটির নিচে জমা পানি কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে আমরা পাই। এ পানি বিশুদ্ধ পানি । বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। নদনদী, খালবিল এবং পুকুরের পানিও আমরা ব্যবহার করি। এসবের পানি যাতে বিশুদ্ধ থাকে, আমরা সেদিকে খেয়াল রাখব।

ভাবতে অবাক লাগে, পরম করুণাময় আল্লাহ পানিচক্রের মাধ্যমে কেমন করে আমাদের প্রতিনিয়ত বিশুদ্ধ পানির জোগান দিয়ে চলেছেন। এ পানি, বৃষ্টি, নদীনালা, সাগর ও মহাসাগর সবই আল্লাহর দান।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, 'তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে তোমরা ভেবে দেখেছ কি? এ পানি মেঘ থেকে তোমরাই নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি।’ (সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত: ৬৮–৬৯)

আলো, বাতাস, পানি সবই আল্লাহ তায়ালার দান। আল্লাহই খাদ্য দেন। ছোট থেকে বড় করেন। সবার প্রয়োজন পূরণ করেন। অসংখ্য তাঁর অনুগ্রহ। তাঁর নিয়ামত গণনা করে শেষ করা যায় না। তাঁর নিয়ামত লাভ করেই আমরা বেঁচে আছি। তিনিই সারা বিশ্ব লালন- পালন করছেন। তিনিই নিখিল বিশ্বের পালনকর্তা ।

চন্দ্র-সূর্য,পশু-পাখি, জীব-জন্তু, আলো-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, গাছ-পালা, সাগর-মহাসাগর, আসমান-জমিন সবকিছু তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সব সৃষ্টিকে তিনি মানুষের আজ্ঞাবহ করে দিয়েছেন। আমরা আল্লাহর আদেশ মতো তাঁর সব নিয়ামত ভোগ করব। আর একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করব। তাঁরই শোকর আদায় করব।

অর্থ : সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর, যিনি সারা বিশ্বের পালনকর্তা।

আল্লাহ আমাদের একমাত্র রব। আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা বলে, 'আমাদের রব আল্লাহ' এবং এর ওপর অবিচলিত থাকে, তাদের নিকট ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় পেয়ো না, চিন্তিত হইও না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল তার জন্য আনন্দিত হও”। (সূরা: হা-মিম সাজদাহ, আয়াত: ৩০)

পরিকল্পিত কাজ: শিক্ষার্থীরা পানিচক্রের একটি ছবি আঁকবে।

Content added || updated By